পুদিনা পাতার ব্যবহার ও উপকারিতা – আমাদের দেশে প্রায় সব জাগায় দেখা যায়, পুদিনা পাতা তরকারি সঙ্গে সুগন্ধি হিসাবে রান্নার কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই পুদিনা পাতার উপকারিতা স্বাদ ও সুগন্ধের পাশা পাশি ,ঔষধি গুণ ও অনেক রয়েছে। পুদিনার পাতা, কান্ড ও মূল সবটাই ঔষধি গুণ সম্পন্ন।
Mint Leaves – পুদিনা পাতার ঔষধি গুণ থাকায়, এই পাতার অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক। পুদিনা পাতার ঔষধিগুণ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকায়, এই পাতার চাষ আবাদ প্রচুর পরিমানে হয়।
এই গাছ দেখতে অনেকটা আগাছা ধরনের। পুদিনা বছরের যে কোনো সময়ে লাগানো যেতে পারে। পুদিনা পাতার ডাল, আদ্র ও ভেজা মাটিতে পুঁতে রাখলেই,বেঁচে যায়। পাতা ও কান্ড বেশ নরম হয়। বিশ্বে প্রায় সব দেশেই কম বেশি পুদিনার গাছ হয়ে থাকে।
এ কারনে আজ কাল বাজারে সহজে কিনতে পাওয়া যায়। পুদিনা এক প্রকার গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এই পাতা প্রায় সবাই চিনি, এই পাতা দেখতে ছোটো ডিম্বাকার, সবুজ রঙের ও খাঁজ কাটার মতো হয়।
এই পাতার বৈজ্ঞানিক নাম – (Mentha spicate), এই পাতা Lamiaceae পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদ। পুদিনা পাতা প্রাচীন কাল থেকেই ঔষধি হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এই পাতা অনেক রোগের আরগ্য জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
জেনে নিন পুদিনা পাতার বিস্ময়কর উপকারিতা
ত্বকেরউপকারিতা – রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালা কমাতে, পুদিনার রস ও এলোভেরার রস এক সাথে মিশিয়ে। ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে, জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মাথা ব্যাথা দূর করতে – পুদিনা পাতা নাকের কাছে ধরলে বা পাতার গন্ধ শুকলেই ,মাথা ব্যাথা থেকে উপকার পাওয়া যায়। কথাটা শুনতে আজব লাগলেও কথাটি সত্য।
পেটের সমস্যার পাশাপাশি ,ওজন কমাতে ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে পুদিনা পাতা। আসলে প্রকৃতির উপাদানটি হল -পুদিনা পাতায় থাকা এন্টি -ইনফ্লেমেটরি উপাদান ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
যাদের হজম শক্তি কম ,তারা পুদিনা শরবত ও পুদিনা পাতার চাটনি খেলে ভালো ফল পাবেন। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ,শরীরের দূষিত পদার্থ মলের সাথে ,বেড়িয়ে যায়। পাতলা পায়খানা ভালো করতেও পুদিনা পাতা ব্যবহার করা হয়।
ত্বকের জন্য পুদিনা পাতা –
- মুখের দুর্গন্ধের জন্য পুদিনা পাতা ব্যবহার করা হয়। পুদিনা পাতা গরম জলের সাথে মিশিয়ে ,
- ওই জল দিয়ে কুলি কুচি করলে। মুখের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ত্বকের রোগের চিকিৎসা যেমন –
- মুখে ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তেল তেলে ভাব দূর করতে।
- তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- ব্রণ দাগ দূর করতে ,পুদিনা পাতার রস প্রতিদিন লাগান।
- সম্ভব হলে সারা রাত রাখতে পারেন।
- যদি সম্ভব না হয় দুই তিন ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন ,তারপর ধুয়ে ফেলুন।
- এ ভাবে মাসখানেক লাগালে ,ব্রণের দাগ উদাও হয়ে যাবে।
চুলের জন্য পুদিনা পাতা
- মাথায় উকুন হলে – চুলের জন্য পুদিনা পাতার উপকারিতা।
- উকুন হলে পুদিনা পাতা ও শেকড়ের রস, গোটা মাথায় চুলের গোড়ায় এই রস ভালো করে লাগান।
- এরপর মাথায় একটি পাতলা কাপড় মাথায় বেঁধে রাখুন।
- ঘন্টা খানেক পর শ্যাম্পু দিয়ে ,চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
- এ ভাবে সপ্তাহে দুদিন করুন ,এক মাসের মধ্যে ফল পাবেন।
- পুদিনা পাতার জুসের উপকারিতা –
- গরমের সময় পুদিনা পাতার রস শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
- গরমের সময় সরবতের সাথে,পুদিনা পাতার রস বা পাতা মিশিয়ে খেতে পারেন।
- স্নান করার আগে জলের মধ্যে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন।
- পরে ওই জল দিয়ে স্নান করলে ,শরীর ও মন ভালো থাকে।
- পুদিনা পাতার রস ত্বকের সংক্রমণ জনিত রোগ থেকে বাঁচায়।
- কারণ – পুদিনা পাতার রস এন্টিব্যায়োটিক এর কাজ করে।
- গরমের সময় গায়ে ফুসকুড়ি হলে।
- পুদিনা পাতা জলের সাথে মিশিয়ে ,স্নান করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
পুদিনা পাতার ঔষুধি গুনাগুন,
- জ্বর এবং সর্দি – কাশি কমাতে পুদিনা পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চায়ের সাথে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরের ব্যাথা থেকে উপকার পাবেন।
- অনেক সময় আমাদের হেঁচকি উঠে, এ সময় পুদিনা পাতার সাথে। কয়েকটি গোলমরিচ পিষে রস পান করলে ,হেঁচকি উঠা বন্ধ হয়।
- পুদিনা পাতা নিয়মিত খেলে ,আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- মুখের স্বাদ বাড়াতে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকর।
- হজম শক্তি বাড়ায় ,গ্যাসের সমস্যা দূর করে ও শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
- উচ্চ রক্তচাপ – নিয়মিত পুদিনা পাতার রস খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে বা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- অনেকের বুক ধড়ফড় করে -যাদের বুক ধড়ফড় করে তারা নিয়মিত পুদিনা পাতার রস বা পাতা খেলে উপকার পাবেন।
- পুদিনা পাতা পিষে রস করে ,তার ভিতর লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে ,দেহের ক্লান্তি ভাব দূর হয়।
- মাঝে মধ্যে প্রস্রাবের সমস্যা বা জ্বালা হলে -সামান্য লবন ,চিনি ও পুদিনা পাতার রস দিয়ে ,সরবত বানিয়ে খেয়ে নিন।
- পুদিনা পাতায় বেশ কিছু উপকারী এনজাইম রয়েছে। যা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে ,কার্য্য কর ভূমিকা পালন করে। ফলে দেহের ভিতরে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সুযোগ পায় না।
- ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায় – পুদিনা পাতার গন্ধ এতটা কড়া হয়,
- যে ইনহেল করলে বুকের জমে থাকা কফ কমতে শুরু করে।
- সেই সাথে ফুসফুসের ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে যায়।
- যদি কোনো দিন কোনো কারণে ,কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
- তখন তার নাকের কাছে কিছু পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন লোকটি জ্ঞান ফিরে পেয়েছে।
পুদিনা পাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ সমন্ধে ভালো লাগলে। আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই রকম ওষধি গাছের উপকারিতা জানতে বা পড়তে হলে, অবশ্যই আমার বাংলার রের সাথে থাকুন।
Khub valo, valuable post