পেয়ারার উপকারিতা কি,Best Benefite of Guava Fruit

Best Benefite of Guava Fruit

 
পেয়ারার উপকারিতা কি এবং অপকারিতা সহ পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি গুণ সম্বন্ধে জানতে অবশ্যই পড়ুন। পেয়ারা আমাদের সকলের প্রিয় একটি ফল। স্বাদ, গন্ধ আর পুষ্টিগুণে পেয়ারার তুলনা হয় না। এই ফল প্রায়ই সব ঋতুতেই খুব কম দামে পাওয়া যায়। 
 

পেয়ারার পুষ্টিগুণ আমাদের অনেকেরই অজানা। অথচ এই পুষ্টিকর ফলটি যেমন আমাদের প্রতিদিনের খাবারের অংশ হতে পারে তেমনি আমাদের অনেক অসুখ বিসুখ থেকে বাঁচা যেতে পারে।
 
আজ পেয়ারার উপকারিতা, পুষ্টিগুণ, ঔষধিগুণ সহ, অতিরিক্ত এ ফলটি খেলে এর অপকারিতা কি এবং কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন সে সমন্ধে জানবো।
 

পেয়ারার উপকারিতা,Best Benefite of Guava Fruit
পেয়ারার উপকারিতা

পেয়ারার উপকারিতা কি ও পুষ্টিগুণ

ডায়রিয়া ভালো করেঃ 
পেয়ারার পাতা প্রাচীন কাল থেকেই ভেষজ ঔষধ হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। 
ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ৬ টি পেয়ারার পাতা নিয়ে তা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পাতার নির্যাস পান করুন দিনে দুইবার যতদিন না আপনি সুস্থ হন।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ 
 
পেয়ারা ফল  একটা ভিটামিন সি সম্পুর্ন ফল এবং এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার আছে । 
 
আপনি নাস্তা বা হালকা খাবার হিসেবে তৈলাক্ত খাবার না খেয়ে পেয়ারা খেতে পারেন যা আপনার পেট ভরবে কিন্তু মেদ বৃদ্ধি করবে না।
বয়সের ছাপ কমায়ঃ 
 
মানুষ যতই সুন্দর হোক না কেন বয়সের সাথে সাথে সবার চামড়াতেই বয়সের একটা ছাপ পড়ে। 
প্রকৃতির এই নিয়মকে কখনই ঠেকানো যায়না কিন্তু আমরা বয়সের এই ছাপ পড়াকে একটু আটকাতে পারি এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেয়ে ,
যা কিনা আমাদের ত্বকের পুনর্গঠনে ভুমিকা রাখে। পেয়ারায় প্রচুর প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কম।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ 
 
অনেক ফলে অনেক সুগার থাকে যার ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় ,
কিন্তু পেয়ারা নিয়মিত খেলে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উপরে করা একটি রিসার্চে জানা গেছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ 
 
পেয়ারার ডায়েটারি ফাইবার আমাদের ব্লাড ভেসেল এবং আর্টারি পরিস্কার রাখে। 
এছাড়া পেয়ারা খেলে এটি আমাদের শরীরের সব অঙ্গে স্বাস্থ্যকর রক্ত প্রবাহে সাহায্য করে।

হজমে সাহায্য করেঃ 

 
যাদের হজমে সমস্যা হয় তারা পরিমাণ ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা আপনার চামড়া থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করবে।
মেটাবলিজম বাড়ায়ঃ 
 
সুস্থ থাকার জন্য ও এনার্জেটিক থাকার জন্য আমাদের একটি স্বাস্থ্যকর মেটাবলিক সিস্টেম থাকা উচিত। 
পেয়ারায় প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার ও এন্টি অক্সিডেন্ট আছে যা কঠিন প্রটিনকে ভেঙ্গে ,
আমাদের শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এটি আমাদের মস্তিস্কের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি করে দেয়।
থাইরয়েডের সমস্যা দূরে রাখেঃ 
 
আগেই বলা হয়েছে পেয়ারা আমাদের শরীরের মেটাবলিক সিস্টেমের অনেক সাহায্য করে। 
আর একটা স্বাস্থ্যকর মেটাবলিক সিস্টেম আমাদের থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাস্থ্যের জন্যও দরকারি।
ক্যান্সার রোধে সাহায্য করেঃ 

পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টি অক্সিডেন্ট আছে। 
এইসব উপাদান আমাদের শরীরে টিউমার ও ক্যান্সারের সেল হতে বাঁধা সৃষ্টি করে। 
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত পেয়ারা খান তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার, নিয়মিত পেয়ারা খেলে উপকার পেতে পারেন। 
এটি যেমন আমাদের সিস্টেমকে পরিস্কার রাখে তেমনি শরীর থেকে ক্ষতিকর অনেক পদার্থ দূর করে আমাদের অনেক অসুখ
বিসুখ থেকে দূরে রাখে।

পেয়ারার উপকারিতা ও অপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ 
 
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ,আমরা অসুখ বিসুখ ও ইনফেকশনে কতোটা সহজে আক্রান্ত হব। 
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা খুব সহজেই অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হয়। 
পেয়ারা ফল  নিয়মিত খেলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ,
আমাদের সহজে অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হওয়া থেকে দূরে রাখে।

পেয়ারার ঔষধিগুণঃ 

পেয়ারার ভিটামিন সি এবং আয়রন ,সর্দি , কাশি এবং জ্বরে উপশমে সহায়তা করে।
 পেয়ারা এর ভিটামিন b3এবং b6মস্তিস্কের জন্য উপকারী ।

পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন-এ চোখের জ্যোতি বৃদ্বি করে।

 ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ করে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক,
 পেয়ারার মধ্যে থাকা কপার থাইরয়েড জনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। 

পেয়ারার অপকারিতাঃ  

 
যেকোন ভাল কিছুই মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহার করেন বা গ্রহন করেন তবে তাঁর ফলাফল ভাল হয়  না ,
তেমনই অধিক পেয়ারা খেলেও আপনাকে পরতে হবে কিছু সমস্যায় ।
পেট ফাপাঃ  
 
পেয়ারা একটি উচ্চ ফ্রুটক্টোজ সমৃধ ফল। আমাদের শরীর অধিক পরিমানে ফ্রুটক্টোজ শোষণের জন্য উপযোগী  নয়। 
তাই অধিক পরিমাণে পেয়ারা খেলে এর খনিজ এই উপাদানটি আমাদের এবং সাথে কিছু ব্যাক্টেরিয়া মিলে পেটে গ্যাস উতপন্ন করে এবং পেট ফাপা অনুভূত হয়।
ডাইরিয়া এবং পেটের পীড়াঃ 
 
উচ্চ মাত্রার ফ্রুক্টজ হজম করতে না পারার কারনে অনেক সময় ডাইরিয়া এবং পেটব্যাথা হতে পারে। 
আর পেয়ার ভিতরের অংশে অনেক বীজ থাকে। এই অংশটি আমাদের পেটে কখনোই ঠিক মত হজম হয়না। 
তাই অধিক পেয়ারা খেলে পেট ব্যাথা এবং পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
সুগার বৃদ্ধিঃ 
 
অধিক পেয়ারা খেলে আপনার ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। 
আর পাশাপাশি এটিতে কোন প্রোটিন এবং ফ্যাট না থাকায় আপনি পেট ভরে পেয়ারা খেলেও একটু পর দেখবেন আপনার আবার ক্ষুধা পেয়ে যাচ্ছে। 
কারন শরীরে প্রোটিনের অভাব থেকেই যায়। তাই এভাবে প্রয়োজনের অধিক খাবার গ্রহন যাদের রক্তে সুগারের সমস্যা আছে তাদের  ক্ষতির কারন হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়াঃ 
 
অন্যান্য যে কোন ফলের মতো পেয়ারাতেও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রামণ হয়। 
বিশেষ করে যদি পেয়ারার চামড়া ফাটা বা ক্ষতিগ্রস্থ থাকে তবে তাতে ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
 
তাই পেয়ারা উপরের চামড়া ফেলে দিয়ে খাওয়া ব্যাক্টেরিয়ার থেকে রেহাই দিতে পারে।

ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে পারেন !

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top